নবজাতকের হঠাৎ জ্বর হলে কী করবেন:
নবজাতকের (০-২৮ দিন বয়স) হঠাৎ জ্বর সব সময়ই অভিভাবকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এ সময় শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল থাকে, তাই সামান্য জ্বরও মারাত্মক সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। এই ব্লগে আমরা জানব, যদি আপনার নবজাতক হঠাৎ করে জ্বরে আক্রান্ত হয়, তখন আপনি কী করবেন, কখন ডাক্তার দেখাবেন, এবং কীভাবে প্রাথমিক যত্ন নিতে হবে—এসব বিষয় নিয়ে।
নবজাতকের জ্বর চেনার উপায়:
নবজাতকের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৯৭.৫°F (৩৬.৫°C) থেকে ৯৯.৫°F (৩৭.৫°C) এর মধ্যে। যদি শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪°F (৩৮°C) বা তার বেশি হয়, তাহলে তা জ্বর হিসেবে গণ্য হয়।
নবজাতকের হঠাৎ জ্বরের সম্ভাব্য কারণ:
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ
প্রসবকালীন ইনফেকশন
গরম আবহাওয়া বা অতিরিক্ত কাপড়
টিকা নেওয়ার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া
প্রসাধনী বা কাপড় থেকে অ্যালার্জি
হঠাৎ জ্বর হলে যা করবেন:
তাপমাত্রা মাপুন: ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার করে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা রেকটালি (পায়ুপথে) মাপা সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য।
ঠান্ডা রাখতে চেষ্টা করুন: শিশুকে হালকা ও আরামদায়ক কাপড় পরান। ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন (২৫–২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
অতিরিক্ত পানি নয়: নবজাতক শুধুমাত্র মায়ের দুধ খেয়ে থাকে, তাই বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যান।
নিজে ওষুধ দেবেন না: নবজাতককে কখনো নিজে প্যারাসিটামল বা অন্য কোনো ওষুধ দেবেন না চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া।
পর্যবেক্ষণে রাখুন: শিশুর আচরণে পরিবর্তন (ঘুমে অস্থিরতা, খাওয়াতে অনীহা, নিঃশ্বাসে কষ্ট, খিঁচুনি) দেখলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিন।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন:
জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি দেখা দিলে
শিশুর বয়স ৩ মাসের নিচে এবং ১০০.৪°F বা তার বেশি তাপমাত্রা হলে
শিশুর খাবার গ্রহণ কমে গেলে
নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হলে বা জ্বর ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলে
প্রতিরোধের উপায়:
প্রসবের সময় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো
নবজাতককে বাইরের রোগজীবাণু থেকে দূরে রাখা
ঘর পরিষ্কার রাখা এবং বাইরের আগন্তুকদের সীমিত প্রবেশ
নবজাতকের বিশেষ গুরুত্ব:
নবজাতকের হঠাৎ জ্বর কখনো কখনো সাধারণ কারণেও হতে পারে, আবার কখনো তা বিপজ্জনক ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে। তাই অভিভাবকদের সতর্ক, সচেতন ও প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণে দ্রুত হতে হবে। সর্বোপরি, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মোঃ মাহমুদুর নবী ( আসলাম)
প্যারামেডিকেল, রেজিঃ নং-১৯৭৪৯৬
মেডিসিন,গাইনী, সার্জারি,মা ও শিশুর রোগ এবং ডেন্টাল মেডিসিনে অভিজ্ঞ।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল টেকনোলজি এবং আলট্রাসনোগ্রাফি (বি মটু), রংপুর।