🧒 বাচ্চার পেটে গ্যাস, পাতলা পায়খানা ও বদহজম: সমাধান এবং চিকিৎসা
শিশুর পেটের সমস্যা অনেক সময় বাবা-মায়ের জন্য ভয়ংকর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে পেটে গ্যাস, পাতলা পায়খানা ও বদহজম—এই তিনটি সমস্যা প্রায়ই একসাথে দেখা যায়। ছোট বাচ্চাদের হজমপ্রক্রিয়া এখনও পুরোপুরি পরিপক্ব নয়, তাই একটু অস্বাস্থ্যকর খাবার, পানি কিংবা দুধ পরিবর্তন হলেই এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
🦠 সমস্যার মূল কারণ কী?
১. অস্বাস্থ্যকর ও অনিয়মিত খাওয়া
২. দুধ বা দুধজাত পণ্যের প্রতি সংবেদনশীলতা
৩. জলবাহিত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
৪. অতিরিক্ত ঠান্ডা বা খাওয়ার পরই শোয়া
৫. অপরিষ্কার হাত-মুখ দিয়ে খাওয়া
এই কারণগুলোর ফলে শিশুর পেটে গ্যাস জমে, পায়খানা পাতলা হয়ে যায় এবং বদহজম দেখা দেয়।
—
⚠ লক্ষণ যা দেখে চিনবেন
পেট ফাঁপা ও মোচড়ানো ব্যথা
অরুচি ও খাবারে অনীহা
বারবার পায়খানা হওয়া, জলীয় ও দুর্গন্ধযুক্ত
পেট থেকে গ্যাস বের হওয়া বা ঢেকুর
দুর্বলতা ও চোখ-মুখ শুকিয়ে যাওয়া
—
🏠 ঘরোয়া সমাধান ও প্রতিকার
১. ওরস্যালাইন দিন নিয়মিত: পাতলা পায়খানায় শরীর থেকে পানিশূন্যতা হয়। তাই প্রতি পায়খানার পর ওরস্যালাইন দিন।
২. ভাতের মাড় ও নরম খিচুড়ি: সহজপাচ্য খাবার শিশুর হজমে সহায়ক।
৩. জিরা বা আদার পানি (১ বছরের বেশি বয়স হলে): অল্প পরিমাণে খাওয়ালে গ্যাস ও বদহজমে উপকার দেয়।
৪. দই বা ঘরের প্রোবায়োটিক: অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সহায়তা করে।
৫. গোল মরিচ ও সামান্য লবণ (বয়স অনুযায়ী): হালকা মাত্রায় দিলে পেটের সমস্যা কমে যেতে পারে।
—
🏥 কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
যদি শিশুর বয়স ৬ মাসের নিচে হয়
পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত বা শ্লেষ্মা থাকে
বারবার বমি হচ্ছে
প্রস্রাব কম হচ্ছে বা একেবারে বন্ধ
চোখ বসে যাচ্ছে, মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে
জ্বর ও দুর্বলতা বাড়ছে
এই পরিস্থিতিতে দেরি না করে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান।
—
✅ প্রতিরোধে যা করণীয়
শিশুকে ফুটানো পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার দিন
দুধ খাওয়ানোর পর হালকা উঠে বসিয়ে রাখুন
বাইরের খাবার ও অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন
শিশুর হাত-মুখ ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
টয়লেট ও রান্নাঘর পরিষ্কার রাখুন
—
🔚 উপসংহার
বাচ্চার পেটের সমস্যা সাধারণ হলেও অজান্তে গুরুতর হতে পারে। তাই প্রাথমিক ঘরোয়া চিকিৎসার পাশাপাশি লক্ষণ বুঝে দ্রুত সঠিক ব্যবস্থা নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে খাবার ও পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিন।