🧒 বাচ্চার (৬ মাস থেকে ৩ বছর) পায়খানা না হলে করণীয় ও চিকিৎসা

🧒 বাচ্চার (৬ মাস থেকে ৩ বছর) পায়খানা না হলে করণীয় ও চিকিৎসা

শিশুর বেড়ে ওঠার প্রতিটি ধাপেই মা-বাবার জন্য নানা রকম চ্যালেঞ্জ আসে। তার মধ্যে একটি সাধারণ কিন্তু দুশ্চিন্তার কারণ হলো পায়খানা না হওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। বিশেষ করে ৬ মাস থেকে ৩ বছরের বয়সী শিশুদের মাঝে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তবে এই সমস্যাকে ঘরোয়া কিছু পদক্ষেপ এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই সমাধান করা যায়।

—

⚠ কেন এই বয়সে পায়খানা বন্ধ থাকে?

১. খাবারের পরিবর্তন: ৬ মাসের পর শিশুকে যখন বুকের দুধ ছাড়িয়ে সলিড খাবার দেওয়া শুরু হয়, তখন হজমে পরিবর্তন আসে।
২. পানি কম খাওয়া: ছোট শিশুরা অনেক সময় পর্যাপ্ত তরল না খেলে মল শুকিয়ে যায়।
৩. ফাইবার ঘাটতি: খাবারে ফলমূল বা শাকসবজি কম থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
৪. মুভমেন্ট কম হওয়া: শিশুদের ঘুম ও বসে থাকার সময় বেশি হলে অন্ত্রের কার্যক্রম ধীর হয়।
৫. মেডিকেশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অনেক ওষুধ কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে।

—

🔍 লক্ষণ যেগুলো লক্ষ্য করবেন

শিশুর ২-৩ দিন পায়খানা না হওয়া

মল খুব শক্ত, শুকনো বা কাঁকর মত হওয়া

পায়খানা করার সময় শিশুর কান্না

পেট ফোলা বা ব্যথা

ক্ষুধা না পাওয়া

—

✅ করণীয় ও ঘরোয়া প্রতিকার

১. পর্যাপ্ত তরল দিন: ৬ মাসের পর থেকে শিশুকে সঠিক পরিমাণ পানি, তরল খাবার (যেমন: স্যুপ, ডাবের পানি) দিন।
২. ফাইবারযুক্ত খাবার: ৮ মাসের পর পাকা পেঁপে, কলা, শাকসবজির স্যুপ, ওটস ধীরে ধীরে খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।
3. পেট ম্যাসাজ: গরম তেল দিয়ে পেটের উপর হালকা ম্যাসাজ করুন, এটি অন্ত্রের গতি বাড়ায়।
4. পায়ের ব্যায়াম করান: শিশুর পা ‘সাইকেল চালানোর’ মতো করে নাড়ালে হজমে সহায়তা হয়।
5. সাধারণ টয়লেট রুটিন: শিশু যখন হাঁটতে শেখে, তখন নিয়ম করে বসার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

—

🧑‍⚕ চিকিৎসা কবে দরকার?

যদি ঘরোয়া চিকিৎসায় কাজ না হয় এবং নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন:

টানা ৩ দিনের বেশি পায়খানা না হওয়া

পায়খানায় রক্ত দেখা

অতিরিক্ত ব্যথা ও কান্না

শিশুর অস্বাভাবিক দুর্বলতা বা বমি

চিকিৎসক প্রয়োজনে শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী হালকা ল্যাক্সেটিভ (মল নরম করার সিরাপ) বা সাপোজিটরি দিতে পারেন। তবে এগুলো সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শেই দিতে হবে।

—

📝 উপসংহার

৬ মাস থেকে ৩ বছর বয়সী বাচ্চাদের পায়খানা না হওয়া একদিকে সাধারণ, আবার উপেক্ষা করলে গুরুতর হতে পারে। সঠিক খাবার, পর্যাপ্ত পানি এবং দৈনন্দিন যত্ন এই সমস্যা কমাতে পারে। আর যদি সমস্যা স্থায়ী হয়, তাহলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

—